Bengali Bible Carey Version । পবিত্র বাইবেল (কেরী ভার্সন) । পবিত্র বাইবেল ডিকশনারী
হক্মোনি:- অর্থ, জ্ঞানী। যিহীয়েলের পিতা; রাজা দায়ূদের পুত্রদের শিক্ষাদানের ভার ছিল এই যিহীয়েলের উপর। তিনি রাজার সৈন্যবাহিনীর একজন বীর যোদ্ধাও ছিলেন, ১ বংশা ১১:১১। হকাটন:- ছোট। হাননের পিতা; তাঁর সাথে ১১০ জন যিহূদী বন্দীদশা থেকে ফিরে আসেন, ইষ্রা ৮:১২।
হক্কোষ:- অর্থ, কাঁটা। মন্দিরের একজন পুরোহিত; পুরোহিতদের দলভাগ করার ভাগ্য পরীক্ষায় সপ্তম বারে তার নাম ওঠে, ১ বংশা ২৪:১০।
হখীলা:- অর্থ, গহিন কালো পাহাড়। আল- কোলাহ পর্বতশ্রেণীর লম্বা ঢাল, যা যিশীমোনের দক্ষিণে সীফ মালভূমির সাথে গিয়ে মিশেছে; এখান থেকে সীফ মালভূমির নিচের দিকে পুরো এলাকা দেখা যেত, ১ শমূ ২৩:১৯। ঐন্-গদী মরুভূমি এলাকায় রাজা শৌলের সঙ্গে আপোষ করার পর দায়ূদ হখীলা পাহাড়ী এলাকায়
ফিরে আসেন, ১ শমূ ২৪:১-৮। সেখানে তিনি স্থায়ীভাবে তাঁর বাসস্থান তৈরি করেন, ১ শমূ ২৬:১-২৫।
হগয়:- অর্থ, আনন্দময়। বারোজন ছোট ভাববাদীর অন্যতম একজন; তিনি তাঁর সমসাময়িক তিনজন ভাববাদীর মধ্যে প্রথম জন (তাঁর সমসাময়িক ভাববাদী সখরিয় ও প্রায় একশত বছর পরের ভাববাদী মালাখি)। যিহূদী জাতির ইতিহাসের একটি বিশেষ সময়ে অর্থাৎ বাবিলের বন্দীদশা থেকে ফিরে আসার পরপরই ভাববাদী হগয়ের কাজ শুরু হয়। তাঁর ব্যক্তিগত জীবনের ইতিহাস সম্পর্কে খুব কমই জানা যায়। রাজা নবূখদ্নিৎসর যেসব যিহূদীকে বন্দী করে নিয়ে যান সম্ভবত তাদের মধ্যে একজন ছিলেন ভাববাদী হগয়। বাবিলের বন্দীত্ব থেকে ফিরে আসার প্রায় ১৬ বছর পর তিনি তাঁর কাজ শুরু করেন। এই সময়ে শমরীয়দের চক্রান্তের কারণে যিরূশালেমের পুনর্নির্মাণের কাজ বন্ধ হয়ে যায়। প্রায় দীর্ঘ ১৫ বছর পুনর্নির্মাণের কাজ বন্ধ থাকার পর ভাববাদী হগয় ও ভাববাদী সখরিয়ের অক্লান্ত চেষ্টায় পুনর্নির্মাণের কাজ
আবার শুরু হয়, ইষ্রা ৬:১৪। এই দুই ভাববাদী ইস্রায়েলীয়দের সমস্ত হতাশা ও অলসতার ঘোর কাটিয়ে নতুন করে জাগরণ সৃষ্টি করেন এবং পারস্য রাজার সরকারী নীতি পরিবর্তনের ফলে যেসব সুবিধা পাওয়া গিয়েছিল সেগুলো কাজে লাগিয়ে নতুন উদ্দীপনায় জেগে ওঠার প্রেরণা যোগান। দেখুন: দারিয়াবস। ভাববাদী হিসেবে হগয় সমাজের প্রতিটি শ্রেণী, ধনী- দরিদ্র, পুরোহিত, সাধারণ মানুষ ও পেশাজীবি সকলের প্রতি অত্যন্ত আবেগপূর্ণ অথচ সাধারণ ভাষায় তাঁর কথা তুলে ধরার মাধ্যমে খুব জোরালো আবেদন জাগিয়ে
তুলতে সক্ষম হতেন, হগয় ১:৫,৭; ২:৪,১৫,১৮। সর্বকালের জন্য কার্যকরী একটি ইব্রীয় প্রবাদ হচ্ছে: “একজন প্রকৃত ঈশ্বরের দর্শন লাভকারীর বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, তিনি সমস্ত মানুষের অন্তরের ভেতরের অবস্থা দেখতে পান ও তাদের অন্তর থেকে খারাপ বিষয় বের করে দিয়ে সেখানে ঈশ্বরের বাক্য ও উত্তম গুণ স্থাপন করতে পারেন, যেন তারা ঈশ্বরের বিবেক দ্বারা চালিত হতে পারে, তাদের জীবনকে খুঁজে পায় এবং সেই জীবনের পূর্ণতা খুঁজে পায়।”
হগয় ভাববাদীর পুস্তক:- এই পুস্তকের অধ্যায় মাত্র দু’টি, কিন্তু তা জ্ঞানসমৃদ্ধ শিক্ষায় পরিপূর্ণ। সামগ্রিকভাবে ভাববাদী হগয়ের মূল লক্ষ্য ছিল যিরূশালেমের উপাসনা-স্থান পুনর্নির্মাণে সমস্ত মানুষকে জাগিয়ে তোলা। প্রথম অধ্যায়ে রয়েছে: তাঁর প্রথম ভবিষ্যদ্বাণী, হগয় ১:২-১১; ও এর ফলাফল, হগয় ১:১২-১৫। দ্বিতীয় অধ্যায়ে রয়েছে: (১) দ্বিতীয় ভবিষ্যদ্বাণী, হগয় ২:১-৯; প্রথম ভবিষ্যদ্বাণীটির পরে এটি প্রকাশিত হয়; (২) তৃতীয় ভবিষ্যদ্বাণী, হগয় ২:১০-১৯; দ্বিতীয়টির ২ মাস ও ৩ দিন পরে তৃতীয় ভবিষ্যদ্বাণীটি প্রকাশিত হয় এবং (৩) চতুর্থ ভবিষ্যদ্বাণী, হগয় ২:২০-২৩; তৃতীয়টির সাথে একই দিনে এটি প্রকাশিত হয়। ভাববাদী হগয়ের বাণীগুলোকে বিভিন্ন স্থানে উদ্ধৃতি হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে, ইষ্রা ৫:১; ৬:১৪; ইব্রীয় ১২:২৬; হগয় ২:৭,৮,২২।
হগ্লা:- অর্থ, তিতির। গিলিয়দীয় সলফাদের কন্যা; মোশি তাদের কাছে পৈত্রিক সম্পত্তির অংশ বণ্টন করে দেন, গণনা ২৬:৩৩; ২৭:১; ৩৬:১১।
হগি:- অর্থ, উৎসব। গাদের পুত্র, যাকোবের নাতি, হগীয় বংশের প্রতিষ্ঠাতা, আদি ৪৬:১৬; গণনা ২৬:১৫।
হগিয়:- যিহোবার উৎসব। লেবীয় শিমিয়ের পুত্র, অসায়ের পিতা; তিনি ছিলেন রাজাদের আমলে গানের দলের একজন সদস্য, ১ বংশা ৬:৩০।
হগীত:- অর্থ, উৎসবমুখর, নৃত্যশিল্পী। রাজা দায়ূদের একজন স্ত্রী, আদোনিয়ের মা, ২ শমূ ৩:৪; ১ রাজা ১:৫,১১; ২:১৩; ১ বংশা ৩:২; আদোনিয় অবশালোমের মত তার সৌন্দর্যের জন্য বিখ্যাত ছিলেন।
হগ্রি:- অর্থ, হাগারের বংশধর। (১) রাজা দায়ূদের শক্তিশালী লোকদের একজন, ১ বংশা ১১:৩৮; একজন পরজাতীয়। (২) হাগারীয় যাসীষ, ১ বংশা ২৭:৩১; তার উপর রাজা দায়ূদের সমস্ত পশুপাল দেখাশুনার দায়িত্ব ছিল। (৩) হাগারীয় বংশ; রাজা শৌলের রাজত্বকালে এই হাগারীয় ও আন্ত-যর্দনীয় বংশগুলোর মধ্যে
ব্যাপক যুদ্ধ সংগঠিত হয়, ১ বংশা ৫:১; এই যুদ্ধে হাগারীয়রা পরাজিত হয়। যুদ্ধে জয়লাভ করে যর্দনীয় বংশগুলো হাগারীয়দের প্রচুর মালপত্র লুট করে নেয় এবং হাগারীয়দের সম্পূর্ণ দেশটি দখল করে নেয়। পরে হাগারীয়রা পূর্ব যর্দনে বসবাস করতে থাকে, কিন্তু সেখান থেকে তারা ইস্রায়েলীয়দের বিরুদ্ধে বারবারচক্রান্ত করতে থাকে, গীত ৮৩:৬।ইশ্মায়েলের বংশের লোকদের সাথে হাগারীয়দের স্পষ্ট পার্থক্য দেখা যায়।
হটীটা:- অর্থ, অনুসন্ধান। মন্দিরের একজন তত্ত্বাবধায়ক, ইষ্রা ২:৪২; তিনি সরুব্বাবিলের সঙ্গে বাবিল থেকে ফিরে আসেন।
হটীফা:- অর্থ, অবরোধ। নফূষীম বংশীয় একজন ব্যক্তি, ইষ্রা ২:৫৪। হটূশ:- অর্থ, সমবেত। (১) লেবীয় বংশীয় একজন পুরোহিত, তিনি সরুব্বাবিলের সঙ্গে বন্দীদশা থেকে ফিরে আসেন, নহি ১২:২। (২) রাজা দায়ূদের একজন বংশধর, তিনি ইষ্রার নেতৃত্বে নির্বাসন থেকে ফিরে আসেন, ইষ্রা ৮:২। (৩) যিরূশালেম নগরীর দেয়াল নির্মাণের একজন কর্মী, নহি ৩:১০। (৪) চুক্তিতে সীলমোহর দানকারী একজন ব্যক্তি, নহি
১০:৪। (৫) যিহূদার রাজবংশীয় একজন ব্যক্তি, ১ বংশা ৩:২২।
হত্যা:- ইচ্ছাকৃতভাবে নরহত্যা করাকে দুর্ঘটনাবশত হত্যাকা- থেকে ভিন্নভাবে দেখা হত এবং এর জন্য কঠিন শাস্তির বিধান ছিল, গণনা ৩৫:১৬,১৮,২১,৩১; লেবীয় ২৪:১৭। “মানুষকে ঈশ্বরের প্রতিমূর্তিতে সৃষ্টি করা হয়েছে”Ñ এই নীতির উপর ভিত্তি করেই মূলত এই বিধানটি তৈরি করা হয়, আদি ৯:৫,৬; যোহন ৮:৪৪; ১ যোহন ৩:১২,১৫। মোশির নিয়ম-কানুনে হত্যার বদলে কোন ধরনের ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা ছিল না, বরং ইচ্ছাকৃত নরহত্যার শাস্তি ছিল মৃত্যুদ-, যাত্রা ২১:১২,১৪; দ্বি.বি. ১৯:১১,১৩; ২ শমূ ১৭:২৫; ২০:১০। বড় ধরনের কোন অন্যায় বা ঘটনার ক্ষেত্রে দুইজন সাক্ষীর প্রয়োজন হত, গণনা ৩৫:১৯-৩০; দ্বি.বি. ১৭:৬-১২। যদি কোন লোকের হত্যাকারীকে খুঁজে বের করা না যেত, তাহলে সেই লোকের মৃতদেহের অবস্থান থেকে যে গ্রাম বা শহর সবচেয়ে কাছে সেই গ্রাম বা নগরের বয়োজ্যেষ্ঠ নেতাদের অপরাধের প্রায়শ্চিত্তের করার ব্যবস্থা অনুসরণ করতে হত। সাধারণত এই অপরাধের প্রায়শ্চিত্তের কাজটি পুরোহিতগণ
অর্থাৎ লেবীয় বংশের সদস্যরা পরিচালনা করতেন, দ্বি.বি. ২১:১-৯। এছাড়াও কিছু অন্যায়কে মৃত্যুদ-যোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য হত, যেমন: ১) পিতা কিংবা মাতাকে আঘাত করা, ২) পিতামাতাকে অভিশাপ
দেওয়া, ৩) কাউকে অপহরণ বা চুরি করে বিক্রি করা, যাত্রা ২১:১৫-১৭; দ্বি.বি.২৭:১৬।
হথক:- অর্থ, খাঁটি। রাজা অহেশ্বরসের রাজপ্রাসাদে ইষ্টের রাণীর সেবায় নিয়োজিত একজন খোজা, ইষ্টের ৪:৫,৬,৯,১০।
হথৎ:- অর্থ, আতঙ্ক। যিহূদা বংশের অৎনীয়েলের পুত্র, ১ বংশা ৪:১৩।
হদত্তা:- অর্থ, নতুন। যিহূদার সর্ব দক্ষিণে অবস্থিত একটি শহর, যিহো ১৫:২৫। হদদ:- অর্থ, অবস্থান, বাসস্থান। (১) একজন ইদোমীয় রাজা, তিনি মাদীয়দের পরাজিত করেন, আদি ৩৬:৩৫; ১ বংশা ১:৪৬। (২) একজন ইদোমীয় রাজা, ১ বংশা ১:৫০,৫১; আদি ৩৬:৩৯। (৩) ইদোমের রাজার একজন বংশধর; তিনি মিশরে পালিয়ে গিয়ে বসবাস করেন এবং মিশরের ফরৌণের স্ত্রীর বোনকে বিয়ে করেন, ১ রাজা ১১:১৪-২২; এরপর তিনি রাজা শলোমনের একজন পরামর্শদাতা হিসেবে নিযুক্ত হন। (৪) ইশ্মায়েলেরএকজন পুত্র, ১ বংশা ১:৩০; আদি ২৫:১৫; এই নামের অর্থ ধারালো। (৫)সিরিয়ার অধিবাসীদের প্রধান দেবতা।
দেখুন: হদর।
হদদ-রিম্মোণ:- দুইজন সিরীয় দেবতার নাম একত্রিত হয়ে এই নামটি গঠিত হয়েছে। (১) মগিদ্দো উপত্যকার একটি স্থান। ভাববাদী সখরিয়ের পুস্তকে উল্লেখ করা একটি প্রবাদ, সখ ১২:১১; এটি যিহোশূয়ের শোকগাঁথার একটি উপদেশমূলক কথা, ২ বংশা ৩৫:২২-২৫।প্রাচীন এই নামের সাথে বর্তমান মগিদ্দো পাহাড়ের পাদদেশে “রুখেমনাহ্” গ্রামের যথেষ্ট মিল খুঁজে পাওয়া যায়, যেটি টেল- মেৎযেল্লুম থেকে দক্ষিণ দিকে প্রায় দেড় ঘণ্টার পথ।
হদদেষর:- অর্থ, হদদ আমার সহায়। সোবার রাজা; আম্মোনীয়দের রাজা হানন রাজা দায়ূদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবার জন্য অন্যান্য জাতিদের সাথে হদদেষরের সৈন্য বাহিনীকেও আহ্বান জানান। এই যুদ্ধে পরাজিত হবার পর রাজা হদদেষর উত্তর দিকে তাঁর দেশের সীমান্ত এলাকা পুনরুদ্ধার করার জন্য চলে যান, ২ শমূ
৮:৩-১২; ১০:১৫-১৯।
হদর:- অর্থ, সাহস। (১) ইশ্মায়েলের একজন পুত্র, আদি ২৫:১৫; ১ বংশা ১:৩০। (২) একজন ইদোমীয় রাজা, আদি ৩৬:৩৯; ১ বংশা ১:৫০,৫১। সম্ভবত পুরাতন নিয়মের মূল অনুলিপি থেকে প্রতিলিপি করার সময় হদদ নামটি পরিবর্তিত হয়ে হদর লেখা হয়। দেখুন: হদদ।
হদসা:- অর্থ, সুগন্ধি পত্রযুক্ত গুল্ম। রাণী ইষ্টেরের হিব্রু নাম, ইষ্টের ২:৭।
হদ্লয়:- বিশ্রাম। ইফ্রয়িমের একজন নেতা, অমাসার পিতা, ২ বংশা ২৮:১২। হদাশা:- অর্থ, নতুন। যিহূদা বংশের বিভিন্ন বংশকে দেওয়া শহরগুলোর মধ্যে একটি শহর, যিহো ১৫:৩৭।
হদোরাম:- অর্থ, মহিমান্বিত। (১) তয়ির পুত্র, রাজা দায়ূদ হদদেষরের সঙ্গে যুদ্ধে জয়ী হয়েছেন শুনে তয়ি তাঁর পুত্র হদোরামকে দায়ূদের কাছে পাঠান, ১ বংশা ১৮:১০। হদোরামের অপর নাম ছিল যোরাম, ২ শমূ ৮:১০। (২) যক্তনের পঞ্চম পুত্র, আরব জাতি বংশের প্রতিষ্ঠাতা, আদি ১০:২৭; ১ বংশা ১:২১। (৩) রাজা রহরিয়ামের অধীনস্থ একজন কর্মকর্তা; রাজা তাকে ইস্রায়েলীয়দের কাছে পাঠিয়েছিলেন; কিন্তু ইস্রায়েলীয়রা তাকে পাথর ছুঁড়ে হত্যা করে, কারণ তারা রাজা রহবিয়ামের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছিল, ২ বংশা ১০:১৮;
তার অপর নাম ছিল অদোরাম এবং অদোনীরাম, ২ শমূ ২০:২৪; ১ রাজা ৪:৬।
হদ্রক:- একটি শহর, সখ ৯:১; বর্তমানে শহরটিকে আর চিহ্নিত করা যায় না। তবে ঐতিহাসিক রলিনসন মনে করেন এটি বর্তমানে আধুনিক “এডিসা” শহর। তিনি বলেন, আশেরীয় শিলালিপিতে এই কথার
উল্লেখ রয়েছে যে, রাজা শালমানেসারের দু’টি যুদ্ধ অভিযান চালান। এই যুদ্ধ চলেপ্রথমত ৭৭৩ খ্রীষ্টপূর্বাব্দে দম্মেশকের বিরুদ্ধে এবং ৭৭২ খ্রীষ্টপূর্বাব্দে হদ্রকের বিরুদ্ধে; পরে রাজা দ্বিতীয় আশূরবানিপাল খ্রীষ্টপূর্ব ৭৬৫ থেকে ৭৫৫ সময়কালের মধ্যে হদ্রকের রাজার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেন।
হননেল:- অর্থ, ঈশ্বর দয়া করে দিয়েছেন।যিরূশালেম প্রাচীরের অন্যতম একটি দুর্গ,নহি ৩:১; ১২:৩৯; যির ৩১:৩৮; সখ১৪:১০।
হনমেল:- অর্থ, ঈশ্বর যাকে প্রচুর ধনসম্পত্তি দান করেছেন। ভাববাদী যিরমিয়ের কাকাতো ভাই; যিরূশালেম নগরী অবরুদ্ধ ও আক্রান্ত হওয়ার আগে ভাববাদী যিরমিয় তার কাছে অনাথোত এলাকায় একটি জমি বিক্রি করেন, যির ৩২:৬-১২।
হনানি:- অর্থ, ঈশ্বর আমাকে এই উপহার দিয়েছেন। (১) হেমনের একজন পুত্র, ১বংশা ২৫:৪,২৫। (২) একজন ভাববাদী,ভাববাদী যেহূর পিতা; রাজা আসাকে তিরস্কার করার জন্য তাকে পাঠানো হয়, কারণ রাজা আসা যিহূদার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য সিরিয়ার রাজা বিন্হদদের সঙ্গে সামরিক জোট গঠন করেন, ২ বংশা ১৬: ১-১০। তাঁর পুত্র যেহূর মধ্য দিয়ে রাজা বাশা ও তাঁর বংশের বিরুদ্ধে সদাপ্রভুর বাক্য প্রকাশিত হয়, ১ রাজা ১৬:৭। (৩) নহিমিয়ের ভাই, নহি ১:২; ৭:২; তিনি নহিমিয়ের কাছে যিরূশালেমে হতাশাজনক অবস্থার কথা জানান; এরপর নহিমিয় তাকে যিরূশালেমের নগর-দ্বার রক্ষার দায়িত্ব দেন। হনানিয়:- অর্থ, যিহোবা দিয়েছেন। বিন্যামীন বংশের একজন নেতা, ১ বংশা ৮:২৪। (২) হেমনের একজন পুত্র, ১ বংশা ২৫:৪,২৩। (৩) রাজা উষিয়ের সেনাপতি, ২ বংশা ২৬:১১। (৪) যিরিয় শেলিমিয়ার নাতি, তিনি ভাববাদী যিরমিয়কে গ্রেফতার করেন, যির ৩৭:১৩। (৫) যিরমিয় ৩৬:১২। (৬) নহিমিয় ১০:২৩। (৭) ইস্রায়েলীয়দের রাজপরিবার ও অভিজাত পরিবারগুলো থেকে যে তিনজন যুবককে রাজা নবূখদ্নিৎসর
তাঁর বাবিলের রাজপ্রাসাদে কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ করেছিলেন তাদের একজন; তাঁর নাম দেওয়া হয় শদ্রক, দানি ১:১; ৬:৭। (৮) সরুব্বাবিলের একজন পুত্র, ১ বংশা ৩:১৯,২১। (৯) ইষ্রা ১০:২৮। (১০) নহিমিয়ের একজন ভাই; তাকে নহিমিয় যিরূশালেমের ভার দেন,কারণ তিনি ছিলেন সৎ এবং ঈশ্বরের প্রতি
অনুগত, নহি ৭:২। (১১) নহিমিয় ৩:৮।(১২) নহিমিয় ৩:৩০। (১৩) ভাববাদীযিরমিয়ের একজন পুত্র, নহি ১২:১২ (১৪)ভাববাদী যিরমিয়ের সমসাময়িক একজনভ- ভাববাদী, যির ২৮:৩,১৭।হনোক:- অর্থ, দীক্ষিত। (১) কয়িনের জ্যেষ্ঠ পুত্র, আদি ৪:১৭; কয়িন নোদ দেশে আদনের পূর্বে একটি নগর গড়ে তোলেন এবং তার পুত্রের নাম অনুসারে নগরটির নাম হনোক রাখেন। পুস্তকে এই নগরটির নামই প্রথমে উল্লেখ করা হয়েছে। (২) যেরদের পুত্র, মথূশেলহের পিতা, আদি ৫:২১; লূক ৩:৩৭। তাঁর জন্মগ্রহণের সময় তাঁর পিতার বয়স হয়েছিল ১৬২ বছর।মথূশেলহের জন্মগ্রহণের পর হনোকের সাথে ঈশ্বরের ৩০০ বছর পর্যন্ত যোগাযোগ
ছিল, আদি ৫:২২-২৪; তিনি পৃথিবীতে ৩৬৫ বছর জীবিত ছিলেন। তিনি ছিলেন আদম পরবর্তী সপ্তম প্রজন্মের বংশধর, যিহূদা ১:১৪। তাঁকে কয়িনের পুত্র এবং আদমের তৃতীয় প্রজন্ম হনোক থেকে আলাদা করে দেখানো হয়েছে। তিনি ঈশ্বরের খাঁটি লোক ছিলেন, ইব্রীয় ১১:১৫। ঈশ্বর তাঁকে নিজের কাছে তুলে নেন, তখনও নোহের জন্ম হয়নি। হনোকের বিষয়ে ভবিষ্যদ্বাণী উল্লেখ আছে যিহূদা ১:১৪ পদে। (৩) অব্রাহামের উপস্ত্রী কটুরার গর্ভজাত মিদিয়নের পুত্র, আদি ২৫:৪; ১ বংশা ১:৩৩। (৪) রূবেণেরজ্যেষ্ঠ পুত্র, আদি ৪৬:৯; যাত্রা ৬:১৪; ১ বংশা ৫:৩।
হন্নাথোন:- অর্থ, দয়ায় পূর্ণ। সবূলূন বংশের উত্তর সীমান্তবর্তী একটি শহর, এটি রম্মোণ উপত্যকার উত্তর দিকে অবস্থিত ছিল, যিহো ১৯:১৪।হন্নীয়েল:- অর্থ, ঈশ্বরের দয়া। (১) মনঃশি বংশের নেতা এফোদের পুত্র, গণনা ৩৪:২৩। (২) আশের বংশের উল্লের পুত্র, তিনি ছিলেন নিজ বংশের নেতা এবং একজন শক্তিশালী বীর যোদ্ধা, ১ বংশা ৭:৩৯। হফ্নি:- অর্থ, মুষ্টিযোদ্ধা বা মক্কেল। পুরোহিত এলির দুই পুত্রের একজন, ১ শমূ
১:৩; ২:৩৪; পুরোহিত এলি বৃদ্ধ হয়ে পড়ায় তাঁর পুত্রদের উপর পৌরহিত্যের দায়িত্বভার অর্পণ করেন। কিন্তু তারা তাদের কলঙ্কপূর্ণ কাজের মধ্য দিয়ে তাদের পিতার বংশের উপর অভিশাপ ডেকে আনে, ১ শমূ ২ অধ্যায়; ৩:১১-১৪। তাদের দুষ্টতার জন্য তাদেরকে “বেলিয়ালের পুত্র” অর্থাৎ “দুষ্ট লোক” বলা হত, ১ শমূ ২:১২। তারা দুজনেই অফেকে পলেষ্টীয়দের সাথে ধ্বংসাত্মক যুদ্ধে মারা যায়, ১ শমূ ৪:১১। দেখুন: পীনহস।
হফ্রা:- মিশরের একজন ফরৌণ; গ্রীক ঐতিহাসিক হেরোডিটাসের মতে এপ্রিস (খ্রীষ্টপূর্ব ৫৯১-৫৭২); তিনি যিহূদার রাজা সিদিকিয়ের সময়ে মিশরের রাজা ছিলেন, যির ৩৭:৫; ৪৪:৩০।
হবক্কূক:- অর্থ, আলিঙ্গন। ১২ জন ছোট ভাববাদীর অষ্টম ব্যক্তি; তাঁর ব্যক্তিগত জীবনের ইতিহাস সম্পর্কে এই পুস্তকে যতটুকু তথ্য আছে তার চেয়ে খুব বেশি কিছু জানা যায় নি। খুব সম্ভবত তিনি লেবীয় সঙ্গীত দলের একজন সদস্য ছিলেন। তিনি ছিলেন ভাববাদী যিরমিয় ও ভাববাদী সফনিয়ের সমসাময়িক।
হবক্কূক ভাববাদীর পুস্তক:- হবক্কূক ভাববাদীর পুস্তক সম্ভবত ৬৫০ থেকে ৬২৭ খ্রীষ্টপূর্বাব্দের মধ্যে লেখা হয়। এই পুস্তকে মোট তিনটি অধ্যায় রয়েছে। এই অধ্যায়গুলোতে যেসব বিষয় নিয়ে লেখা হয়েছে সেগুলো সংক্ষেপে এমন: ভাববাদী হবক্কূক তাঁর আত্মিক ক্ষমতায় উপলব্ধি করেন যে, কল্দীয় রাজা তাঁর ভয়ংকর ধ্বংসকারী শক্তি নিয়ে এগিয়ে আসছেন এবং তাঁর দেশ ধ্বংস করে ফেলার পরিকল্পনা করছেন। তিনি আরও দেখলেন, এই মহা শক্তিধর মন্দ রাজা যিহূদাকে ধ্বংস করে ফেলবেন; তখন তিনি ঈশ্বর সদাপ্রভুর কাছে এই বিষয় নিয়ে তাঁর অভিযোগ ও ক্ষোভ মিনতি হিসেবে তুলেধরেন। কিন্তু যিহূদার পাপের কারণেই এসব শাস্তির ঘটনা ঘটতে যাচ্ছে, সে কথা প্রকাশ্যে ঘোষণা করেন ভাববাদী হবক্কূক, হবক ১:২-১৭। যিহূদা জাতির বহু পাপের শাস্তি হিসেবে কল্দীয় জাতিকে ঈশ্বর ব্যবহার করছেন, সেকথাও তিনি বলেন হবক্কূক পুস্তকের ২ অধ্যায়ে। পুস্তকটির এই অধ্যায়ে যিহূদার ধ্বংসপ্রাপ্ত অবস্থা, ঈশ্বরের প্রতি ভাববাদীর ভক্তিপূর্ণ আস্থা প্রকাশকারী হৃদয়ের বর্ণনা এবং তাঁর দেশের ধ্বংসের জন্য দায়ী শত্রু কল্দীয় জাতিকে শাস্তি দেওয়ার আশা বিভিন্নভাবে প্রকাশিত হয়েছে। পুস্তকটির তৃতীয় অধ্যায়ে ভাববাদী হবক্কূকের ছন্দবদ্ধ প্রার্থনা গানের হিসেবে উৎসর্গ করা হয়েছে এবং এই সব গানের তিনি একজন প্রধান গানের গায়কের উদ্দেশে নিবেদন করেছেন,
যেগুলো মূলত ঈশ্বর সদাপ্রভুর উপাসনার একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসেবে বিবেচিত হয়। এসব প্রার্থনার প্রশংসা-গানের ভাষা ও কাল্পনিক চিত্রের প্রতীকী উপস্থাপনার মাধ্যমে ঈশ্বরের এক মহান জাঁকজমকপূর্ণ ও মহিমাপূর্ণ বৈশিষ্ট্য প্রকাশিত হয়। হবক্কূক ২:৪ পদে ভাববাদী বলেছেন, “যাকে ধার্মিক বলে গ্রহণ করা হয় সে তার বিশ্বস্ততার দরুন বেঁচে থাকবে।” এই কথাগুলো পৌল তাঁর রোমীয়দের ও গালাতীয়দের প্রতি লিখিত পত্রে ব্যবহার করেন, রোমীয় ১:১৭; গালা ৩:১২। ইব্রীয়দের প্রতি লিখিত পত্রে হবক্কূক পুস্তকের বিভিন্ন অংশের উল্লেখ আছে, ইব্রীয় ১০:৩৭,৩৮। হবৎসিনিয়:- রেখবীয় যিরমিয়ের পিতা; যিহূদার রাজা যিহোয়াকীমের রাজত্বের সময়ে ভাববাদী যিরমিয় হবৎসিনিয়ের নাতিসহ রেখবীয়দের গোটা বংশকে সদাপ্রভুর গৃহে নিয়ে আসেন, যির ৩৫:৩। হবা:- অর্থ, জীবন; জীবন্ত। আদমের স্ত্রী, আদি ৩:২০। হবা জীবন লাভের পর আদম নিজেই নামটি রাখেন, আদি ২:২১,২২। সদাপ্রভু দেখেন যে, মানুষ একা থাকতে পারে না তাই তিনি তাঁর জন্য একজন উপযুক্ত সঙ্গী সৃষ্টি করেন এবং সেই থেকে নারী-পুরুষ বিবাহ প্রথায় এক সাথে থাকার অনুমোদন পায়। ম্যাথিউ হেনরী বলেন: “এই সঙ্গী সৃষ্টি হয়েছিল পুরুষের পাজর থেকে, যেন এই নারীকে পুরুষ নিজের মত ভালবাসে। পুরুষের মাথার অংশ থেকে সৃষ্টি হয়নি, যেন নারী পুরুষকে শাসন না করে বা পায়ের অংশ থেকে সৃষ্টি হয়নি, যেন পুরুষ তার প্রতি জুলুম না করে; বরং শরীরের মাঝের অংশ
থেকে সৃষ্টি হয়েছে, যেন তারা সম অধিকারে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। স্ত্রীকে সদাপ্রভু বিশেষ অনুগ্রহ এবং বিশেষ দূরদর্শিতায় তৈরি করেছেন, যেন তারা স্বামীদের সাহায্যকারী হয়।” সাপের সুচতুর প্রলোভনে হবা ঈশ্বরের আদেশ অমান্য করে নিষিদ্ধ ফল খান এবং সেই ফলের অর্ধেক তাঁর স্বামীকে খেতে দেন, আদি ৩ অধ্যায়; ১ তীম ২:১৩-১৫; ২ করি ১১:৩। তাঁর প্রথম পুত্রের জন্ম হলে তিনি বলেন, “সদাপ্রভুর সহায়তায় আমি পুত্র সন্তান লাভ করলাম,” আদি ৪:১। কয়িনের জন্মের মধ্য দিয়ে ঈশ্বরের ্র তিশ্রুত “নারীকুলের বীজ” উৎপন্ন হয়।
হবায়:- একজন পুরোহিত, নির্বাসন থেকেফিরে আসার পর পুরোহিতদের মধ্য থেকে হবায় এবং অন্যান্যরা ইস্রায়েলীয়দের বংশতালিকার মধ্যে তাদের বংশের খোঁজ করে, কিন্তু তাদের নাম পাওয়া না যাওয়ায় অশুচি
হিসেবে পুরোহিতদের মধ্য থেকে তাদের বাদ দেওয়া হয়, ইষ্রা ২:৬১। হবীলা:- অর্থ, বালুকাময় অঞ্চল। (১) প্রচুর স্বর্ণ, গুগ্গুলু ও বৈদূর্যমণি সমৃদ্ধ একটি দেশ, আদি ২:১১। এটি বাবিলের গোটা পশ্চিম সীমান্তবর্তী এলাকা, যা বিস্তৃতি লাভ করছে ইউফ্রেটিস নদীর নিম্নাংশ থেকে ইদোম পর্বতশ্রেণী পর্যন্ত। (২) আরবীয় ফেলিক্সের একটি প্রদেশ। প্রাচীনকালে সম্ভবত এটি ছিল কূশীয়দের দখলে, আদি ১০:৭; পরবর্তীতে যক্তনীয় বংশের লোকেরা এখানে বসবাস করতো, আদি ১০:২৯; অথবা কূশীয় ও যক্তনীয় উভয় বংশের লোকেরা সম্ভবত এখানে বসবাস করতো, আদি ২৫:১৮। প্রদেশটি পারস্য থেকে আরব্য উপসাগরীয় অঞ্চল পর্যন্ত বিস্তৃত একটি বিশাল প্রান্তর। (৩) কূশের একজন পুত্র, আদি ১০:৭; ১ বংশা ১:৯। (৪) যক্তনের একজন পুত্র, আদি ১০:২৯; ১ বংশা ১:২৩।
হমাত:- দেখুন: হামা।
হমূটল:- অর্থ, শিশিরের আত্মীয়। লিব্না শহরের যিরমিয়ের কন্যা, রাজা যোশিয়ার স্ত্রী এবং রাজা যিহোয়াহস ও রাজা সিদিকিয়ের মাতা, ২ রাজা ২৩:৩১; ২৪:১৮।
হমোর:- অর্থ, পুরুষ গাধা। একজন হিব্বীয় ব্যক্তি, যাকোব ১০০ কসীতা দিয়ে তার কাছ থেকে একটি জমি ক্রয় করেন, পরে সেখানে যোষেফকে কবর দেওয়া হয়, আদি ৩৩:১৯। প্রেরিত পুস্তকে এই জায়গার নাম বলা হয়েছে “এম্মোর,” প্রেরিত ৭:১৬। হমোরের পুত্র শিখিম এই শহরের গোড়াপত্তন করে এর নাম দেন “হমোর”। পরবর্তীতে যাকোবের কন্যা দীণাকে লাঞ্ছিত করার প্রতিশোধ গ্রহণের জন্য লেবীয় এবং শিমিয়োন শহরটি ধ্বংস করে ফেলেন, আদি ৩৪:২০; পরে হমোর এবং শিখিমকেও হত্যা করা হয়, আদি
৩৪:২৬।
হম্মত:- একজন কীনীয়, রেখবীয়দের পূর্বপুরুষ, ১ বংশা ২:৫৫।
হম্মদাথা:- গরম ঝর্ণার জল। পারস্য রাজা অহেশ্বরসের প্রধানমন্ত্রী হামানের পিতা, তাকে “অগাগীয়” নামে ডাকা হত, ইষ্টের ৩:১,১০; ৮:৫।
হম্মৎ:- অর্থ, ঝর্ণা। নপ্তালি বংশের একটি দেয়াল-ঘেরা শহর, যিহো ১৯:৩৫। এই ঝর্ণা থেকে ১৩৬ ডিগ্রী থেকে ১৪৪ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রার গরম জলে ধারা বের হয়ে আসত; আজও এটি দক্ষিণ তিবেরিয়া অঞ্চলে “হম্মোন তাবারিয়া” অর্থাৎ “তিবেরিয়ার ঝর্ণাধারা” নামে একটি অপেক্ষাকৃত ছোট আকারের ঝর্ণা হিসেবে টিকে আছে।
হম্মেয়া:- অর্থ, একশত। নহিমিয়ের আমলে যিরূশালেমের পূর্ব দেওয়ালের উপর অবস্থিত একটি দুর্গ, নহি ৩:১।
হম্মোন:- অর্থ, উষ্ণ ঝর্ণাধারা। (১) আশের বংশের একটি শহর, এর অবস্থান ছিল সোর শহর থেকে ১০ মাইল দক্ষিণে সীদোনের কাছে, যিহো ১৯:২৮; আজকের অয়িন হামুল শহরের সঙ্গে এর যথেষ্ট মিল খুঁজে পাওয়া যায়। (২) নপ্তালি বংশের একটি লেবীয় শহর, ১ বংশা ৬:৭৬। সম্ভবত এই হম্মোন ও হম্মৎ একই স্থান, যিহো ১৯:৩৫। দেখুন: হম্মৎ, বালহম্মোন।
হম্মোলেকত:- অর্থ, রাণী। মাখীরের কন্যা, গিলিয়দের বোন। তার পুত্ররা ছিল ঈশ্হোদ, অবীয়েষর ও মহলা, ১ বংশা ৭:১৭,১৮।
হম্মোৎ-দোর:- অর্থ, দোরের উষ্ণ ঝর্ণাধারা। নপ্তালি বংশের একটি লেবীয় শহর, যিহো ২১:৩২; সম্ভবত এটি দেয়াল- ঘেরা হম্মোৎ গ্রাম, যিহো ১৯:৩৫।
হরমাগিদোন:- শুধুমাত্র প্রকাশিত বাক্যের ১৬:১৬ পদে এই শব্দ উল্লেখ করা হয়েছে। যেখানে মহা সঙ্কটের দিনে “সর্বশক্তিমান সদাপ্রভুর সাথে যুদ্ধ হবে” সে জায়গার প্রতীকী নাম হিসেবে হরমাগিদোনকে
বুঝানো হয়েছে, প্রকা ১৪ অধ্যায়। শব্দটির সঠিক অর্থ হল “মিগদ্দো পর্বত”। এটি হল খ্রীষ্ট-বিশ্বাসী ও যারা খ্রীষ্ট-বিশ্বাসীয় নয় তাদের মধ্যেকার বিরোধের শেষ দৃশ্য। পঞ্চপুস্তকের অয়ালোন সমতল ভূমির
মহাযুদ্ধের পটভূমি থেকে এরূপ দৃশ্যের ধারণা এসেছে।
হরাদা:- অর্থ, আতঙ্ক, ভয়। ইস্রায়েলীয়দের যাত্রাকালীন ২৫তম বিশ্রাম স্থান, গণনা ৩৩:২৪।
হরারীয়:- অর্থ, পর্বতে বসবাসকারী। যিহূদা অথবা ইফ্রয়িমের একটি পার্বত্য অঞ্চল, ২ শমূ ২৩:১১,৩৩; ১ বংশা ১১:৩৪,৩৫।
হরিণ:- (১) হিব্রু “আইয়েল,” পুরুষ হরিণ। একটি চতুষ্পদ হালাল প্রাণী। মোশির নিয়ম-কানুন অনুসারে একে শূচি বা খাওয়ার যোগ্য বলা হয়েছে, দ্বি.বি.১২:১৫; ১৫:২২; সাধারণত খাবার জন্যই এগুলোকে মারা হত, ১ রাজা ৪:২৩। এই হরিণকে বাইবেলের অনেক পুস্তকের কবিতায় ও ভাববাদীদের ভবিষ্যদ্বাণীতে উল্লেখ করা হয়েছে, যিশা ৩৫:৬; শলো ২:৮,৯; বিলাপ ১:৬; গীত ৪২:১। (২) হিব্রু “দিশোন,” অর্থাৎ “ছটফটে,” দ্বি.বি. ১৪:৫। এরা লম্বায় প্রায় সাড়ে ৩ ফুট হয়, এদের ঘাড় উঁচু এবং এদের শিং প্রায় আড়াই ফুট লম্বা হয়ে থাকে। এদের গায়ের রং সাধারণত সাদা, কেশর কালো এবং ঘাড়ের পিছনটা তামাটে রঙের হয়ে থাকে। (৩) হিব্রু “ইয়ামুর”, অর্থাৎ “লাল বর্ণ,” অনেকে এটিকে সাধারণভাবে ‘পিঙ্গল বর্ণ হরিণ’ বা বাচ্চা হরিণ, দ্বি.বি. ১৪:৫; ১ রাজা ৪:২৩। এগুলো পশ্চিম ও দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর বন্য এলাকায় ব্যাপকভাবে দেখা যায়। হাল্কা লাল অথবা হলুদ রংকে বলে পিঙ্গল রং। বাইবেলের অনেক ব্যাখ্যাকারী বলেন, এই প্রাণীটি উত্তর আফ্রিকার “বন্য গরু” বা ‘এ্যান্টিলোপ’, যেগুলো আকারে দক্ষিণ আফ্রিকার হাট্রিবিস্ট-এর মত ও দেখতে অনেকটা শিকারী কুকুর ‘স্ট্যাগ’ -এর মত। শলোমন ২:৯,১৭ পদে একে ‘বাচ্চা হরিণ’ বলা হয়েছে; হাবা ৩:১৯ পদে হরিণীর পায়ের সাথে তুলনা করা হয়েছে। কর্মিল পর্বত এলাকায় এক প্রজাতির হরিণ দেখতে পাওয়া যায়, যাকে আরবীয়রা বলেন ‘ইয়ামার,’ এবং এগুলো আবারঅনেকটা ইউরোপের “রিওবোক”-এর মত দেখতে।
হরিণী:- (১) হিব্রু “আইয়ালাহ,” ২ শমূ ২২:৩৪; গীত ১৮:৩৩; হিব্রু “আইয়েলেথ,” গীত ২২:১; স্ত্রী হরিণ;
রূপক অর্থে: অশান্ত, আদি ৪৯:২১; নারীসুলভ কমনীয়, হিতো ৫:১৯; স্থির আকাঙ্খা যুক্ত, শলো ২:৭; ৩:৫; গীত ৪২:১; ভীরু, গীত ২৯:৯। গীত ২২:১ পদের শিরোনামে উল্লিখিত শব্দটি সম্ভবত কোন বিশেষ সুরের নাম প্রকাশ করে। (২) হিব্রু শব্দ “ইয়া’য়ালাহ,” ২ শমূ ১:১৯;২:১৮; হিতো ৫:১৯; শলো ৪:৫;
২:৯,১৭; ৮:১৪; প্রেরিত ৯:৩৬। দক্ষিণপশ্চিম এশিয়ার দ্রুতগামী হরিণ। ইস্রায়েলীয়রা মরুভূমিতে বুনো হরিণের মাংস খেতো, কনান দেশেও তারা কৃষ্ণসার বা হরিণের মাংস খেতো, দ্বি.বি. ১২:১৫,২২। ইসহাকই সর্বপ্রথম বন্য হরিণের মাংস খেতে চান, আদি ২৭ অধ্যায়। গেরা উপত্যকা ও র্বে-শেবার সমতল ভূমিতে এখনও বন্য হরিণ দেখতে পাওয়া যায়। মিশরীয়দের শিলালিপিতে শিকারী কুকুর দিয়ে বন্য হরিণ শিকারের চিত্র অঙ্কিত রয়েছে।
হরূফীয়:- হরূফ বংশের লোক, প্রকৃতপক্ষে শফটীয় জাতির লোকেরা এই বংশীয় গুণবাচক উপাধি গ্রহণ করতো; সিক্লগে রাজা দায়ূদের সঙ্গে যোগদানকারী একজন যোদ্ধা, ১ বংশা ১২:৫।হরোদীয়:- রাজা দায়ূদের দু’জন বিশেষ বীর যোদ্ধা শম্ম ও হেলসের গুণবাচক উপাধি, ২ শমূ ২৩:২৫; ১ বংশা ১১:২৭। হরোশৎ:- প্যালেষ্টাইনের উত্তরে গালীলের উচ্চভূমি অঞ্চল বা গালীলের পরজাতীয় লোকদের বাসস্থান হাৎসোর শহরের পাশেই অবস্থিত একটি শহর, বিচার ৪:২। এর অবস্থান ছিল এসদ্রালোনের সমভূমিতে
ঢোকার মুখে কার্মেল পাহাড়ের পাদদেশ। এর হিব্রু নাম “হরোশৎ হা-গোয়িম” অর্থাৎ “জাতিগণের কামারশালা,” কারণ রাজা যাবীনের সমস্ত লোহার তৈরি যুদ্ধ রথ এবং যুদ্ধাস্ত্র ইত্যাদি এখান থেকেই তৈরি করা হত। এই এলাকার সঙ্গে বর্তমান আলহারিথিয়া এলাকার প্রচুর মিল খুঁজে পাওয়া
যায়।
হর্ণেফর:- আশের বংশের শোফহের পুত্র এবং বংশের নেতা, ১ বংশা ৭:৩৬।
হর্বোণা:- অর্থ, গাধার চালক। রাজা অহশ্বেরসের রাজদরবারের সাতজন সেবাকারীর একজন, যাকে রাজা আদেশ দেন বষ্টী রাণীকে রাজমুকুট পরিয়ে রাজার সামনে নিয়ে আসার জন্য, ইষ্টের ১:১০;৭:৯।
হর্মগিনি:- অর্থ, বুধ হতে উৎপন্ন। এশিয়া মাইনরে পৌলের একজন সহকর্মী, ২ তীম ১:১৫; পরবর্তীতে বিভিন্ন দুর্যোগে বাধাপ্রাপ্ত হওয়ায় তিনি ফুগিল্লের সঙ্গী হয়ে পৌলকে ত্যাগ করেন।
হর্মা:- অর্থ, প্রচ- আঘাত, অভিশাপ, চূড়ান্তধ্বংসের জন্য রক্ষিত স্থান। পারণ মরুভূমিতে যাত্রার সময় ইস্রায়েলীয়রা যখন কাদেশে আস্তানা ফেলে, তখন তাদের গোয়েন্দারা প্রতিজ্ঞা করা দেশ থেকে ফিরে তার সম্পর্কে নেতিবাচক সংবাদ প্রদান করে। ফলে ঈশ্বরের রাগ ইস্রায়েলীয়দের উপর প্রকাশ পায় এবং তারা তাদের আচরণের জন্য ক্ষমা চায়, এরপর তারা প্রতিজ্ঞা করা দেশে যাওয়ার জন্য সদাপ্রভুর উপস্থিতি সাক্ষ্য-সিন্দুক এবং মোশিকে ছাড়াই পাহাড়ের চূড়ায় রওনা দেয়। অমালেকীয় ও কনানীয়রা নিচে নেমে এসে তাদেরকে হামলা করে এবং তাদেরকে তাড়িয়ে হর্মা শহর পর্যন্ত নিয়ে যায়, গণনা ১৪:৪৫; বিচার ১:১৭। পরবর্তীতে ইস্রায়েলীয়রা যখন কাদেশে দ্বিতীয়বার আস্তানা ফেলে, তখন কনানীয় রাজা অরাদ
তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেন এবং তাদের কয়েকজনকে বন্দী করেন, গণনা ২১:১- ৩। কিন্তু ইস্রায়েলীয়রা সদাপ্রভুর শক্তিতে তাদেরকে ধ্বংস করে এবং তখন থেকেই জায়গাটার নাম হর্মা। কিন্তু এই “ধ্বংস” যিহোশূয়ের সময়ের আগে পুরোপুরি সাধিত হয়নি; তিনি এই অঞ্চলের রাজাকে পরাজিত করেন, ফলে প্রাচীন সফাৎ নামটি বদলে “হর্মা” নাম রাখা হয়, যিহোশূয় ১২:১৪; বিচার ১:১৭।
হর্মোণ:- অর্থ, পবিত্র পাহাড়। একটি পাহাড়, লেবাননের বিপরীতে পূর্বদিকের বিস্তৃত, ভূমধ্যসাগর থেকে ৯,২০০ ফুট উঁচু; এটি পলেষ্টীয়দের উত্তর সীমান্ত নির্দেশ করে, দ্বি.বি. ৩:৮; ৪:৪৮; যিহো ১১:৩,১৭; ১৩:১১; ১২:১; পাহাড়টি গালীল সাগর থেকে ৪০ মাইল উত্তরে অবস্থিত। একে “হর্মোণ গিরিশ্রেণী” বলা
হয়, কারণ এর একাধিক চূড়া আছে, গীত ৪২:৬। সীদনীয়েরা হর্মোণকে সিরিয়োণ বলে এবং ইমোরীয়রা বলে সনীর, দ্বি.বি.৩:৯; শলো ৪:৮। একে বাল-হর্মোণ এবং সীওন বলা হত, বিচার ৩:৩; ১ বংশা ৫:২৩; দ্বি.বি. ৪:৪৮। খুব সম্ভবত এই তিনটি চূড়ার কোন একটিতেই খ্রীষ্টের রূপান্তরের ঘটনাটি ঘটে। “হমোর্ণের
শিশির,” গীত ৮৯:১২; এর আধুনিক নাম জাবাল-ইশ-শাইখ বা “পর্বতের নেতা”। এটি প্যালেষ্টাইন বা সিরিয়ার অন্যতম বিখ্যাত একটি পর্বত। পলেষ্টীয়দের যে কোন স্থান থেকে উত্তর দিকে তাকালে হর্মোণ পাহাড় চোখে পড়তো; এখনও সমতল সমুদ্র উপকূল থেকে, যর্দনের উপত্যকা থেকে, মোয়াব ও গিলিয়দের উঁচু জমি থেকে ও বাশনের মালভূমি থেকে উত্তর দিগন্তে তাকালেই ফিকে নীল, তুষারে মোড়া পর্বতশৃঙ্গের কাঠামোটি চোখে পড়ে।সেবাকারী,ইষ্রা ২:৫২; নহি ৭:৫৪।
হর্হস:- দেখুন: হস্রহ।
হর্হয়:- অর্থ, যিহোবার আগ্রহ। একজন স্বর্ণকার, উষীয়েলের পুত্র; তিনি যিরূশালেমের ভেঙ্গে যাওয়া প্রাচীরের একটি অংশ মেরামত করেন, নহি ৩:৮।
হর্হূর:- অর্থ, অনুকূল। একজন নথীমীয়; তার বংশধরেরা সরুব্বাবিলের নেতৃত্বে রাজা নবূখদ্নিৎসরের বন্দীদশা থেকে মুক্ত হয়ে দেশে ফিরে আসে, ইষ্রা ২:৫১।
হলহ:- মাদীয় দেশের একটি প্রদেশ; আশেরিয়ার রাজা শমরীয় দখল করে নেওয়ার পর সমস্ত ইস্রায়েলীয়দের বন্দী করে নিয়ে এসে হলহ শহরের হাবোর নদীর ধারে গোষণ এলাকায় বাস করতে দেন, ২ রাজা ১৭:৬; ১৮:১১; ১ বংশা ৫:২৬। হলহের হাবোর (বর্তমান খাবুর) নদীর উৎপত্তি হয় জেরুজার অঞ্চলে। সম্ভবত বর্তমান টলেমী ক্যালসিটি শহরটিই হচ্ছে প্রাচীন হলহ শহর।
হল্হূল:- অর্থ, সম্পূর্ণ ফাঁপা। যিহূদার উঁচূ এলাকার একটি শহর, যিহো ১৫:৫৮; বর্তমানে এখানে একই নামের ছোট একটি গ্রাম আছে, গ্রামটি যিরূশালেমে যাবার পথে হিব্রোণ শহর থেকে ৫ মাইল উত্তর-পূর্বে
অবস্থিত। কথিত আছে, রাজা দায়ূদের ঘনিষ্ঠ বন্ধু গাদ মারা গেলে তাকে এখানে কবর দেওয়া হয়, ২ শমূ ২৪:১১।
হশবদ্দানা:- অর্থ, বিচারের জন্য বিবেচিত।ইষ্রা যখন মঞ্চে দাঁড়িয়ে পঞ্চপুস্তক পাঠ করতেন, তখন অন্যান্যদের সঙ্গে হশবদ্দানাও তাঁর পাশে দাঁড়াতেন এবং সকলের সঙ্গে হাত তুলে ঈশ্বরের প্রশংসা
সহকারে “আমেন” বলতেন, নহি ৮:৪।
হশব্নিয়:- (১) নহিমিয় ৩:১০। (২)
একজন লেবীয় নেতা; ইষ্রা তাকে জনসাধারণের কাছে ঈশ্বরের নিয়ম-কানুন ব্যাখ্যা করার জন্য নিযুক্ত করেন, নহি ৯:৫।
হশবিয়:- অর্থ, যিহোবা দ্বারা সম্মানিত। (১) অমৎসিয়ের পুত্র, মল্লুকের পিতা; একজন লেবীয় এবং রাজা দায়ূদের আমলে মন্দিরের গান-শিল্পী, ১ বংশা ৬:৪৫। (২) শময়িয়ের পিতা, ২ বংশা ৩৫:৯। (৩) রাজা দায়ূদের অধীনস্থ একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, ১ বংশা ২৬:৩০। (৪) একজন লেবীয় শিক্ষাগুরু; নহিমিয় বন্দীদশা থেকে ফেরার সময় তাকে সাথে করে নিয়ে আসেন, ইষ্রা ৮:২৪। (৫) একজন মরারীয় লেবীয়, ১ বংশা ৬:৪৫; ৯:১৪। (৬) যিদূথূনের পঞ্চম পুত্র, ১ বংশা ২৫:৩,১৯। (৭) হেবরনীয় বংশের একজন ব্যক্তি,
কমূয়েলের পুত্র, ১ বংশা ২৬:৩০। (৮) লেবীয়দের একজন নেতা, ২ বংশা ৩৫:৯। (৯) একজন লেবীয়, নহি ১১:২২। (১০) ইষ্রার আমলের একজন প্রধান পুরোহিত, ইষ্রা ৮:২৪। (১১) লেবীয় বংশের একজন নেতা, নহি ১২:২৪। (১২) ইষ্রা ৮:১৯।
পৃষ্টা--- আরো আছে
1169