ডাক:- দেখুন: আহবান।
ডাকাত:- দেখুন: ডাকাতি।
ডাকাতি:- লুটপাট; ইশ্মায়েলীয়রা ডাকাতি করাকে সম্মানজনক কাজ বলে মনে করতো, আদি ১৬:১২। কল্দীয়রা ও সাবায়ীয়রা প্রায়ই লুটপাট করতো, ইয়োব ১:১৫,১৭। শিখিমের লোকেরা লুটপাট করতো, বিচার ৯:২৫। রাজা দায়ূদ অমালেকীয়দের আক্রমণ করে সব লুটপাট করতেন, ১ শমূ ২৭:৬-১০; ফলে অমালেকীয়রা এর সমুচিত জবাব দেয়, ১ শমূ ৩০ অধ্যায়। ইস্রায়েলীয়দের বিশৃক্সখল উত্তর রাজ্যে ডাকাতি খুব প্রচলিত ছিল, হোশেয় ৪:২; ৬:৯; মীখা ২:৮। রোম
সম্রাটের দুঃশাসনের সময় প্যালেষ্টাইনের পর্বতের গুহায় ডাকাতদের আস্তানা গাড়ার সুযোগ থাকার ফলে ডাকাতরা যিহূদায় প্রভাব বিস্তার করে, লূক ১০:৩০; যোহন ১৮:৪০; প্রেরিত ৫:৩৬,৩৭; ২১:৩৮; ২ করি ১১:২৬। ডাকাতদের শাস্তির কথা উল্লেখ করা হয়েছে যাত্রা ২২ অধ্যায়ে। মথি ২৭:৩৮ পদে “চোর” অনুবাদ করা হয়েছে “ডাকাত” বা “দস্যু” হিসেবে। দেখুন: লুটপাট।
ডাক্তার:- দেখুন: বৈদ্য।
ডানা:- পাখির ডানা, লেবীয় ১:১৭; করূবের ডানা, ১ রাজা ৬:২৪; অথবা অন্য কোন প্রাণীর ডানা, যিহি ১৬ অধ্যায়;
১০:৫; প্রকা ৪:৮; বাজপাখি ও ঈগল পাখি ডানা মেলে দিয়ে উঁচুতে ওড়ে, ইয়োব ৩৯:২৬। অনেক ক্ষেত্রে বাইবেলে প্রতীকী
অর্থে ‘ডানা’ শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে, গীত ১৮:১০; ৫৫:৬; ১৭:৮; ৯১:৪; আবার ফিরে পাওয়া শক্তি বা ক্ষমতা সম্পর্কে বলা হয়েছে, যিশা ৪০:৩১; সহানুভ‚তি প্রকাশের জন্য, মথি ২৩:৩৭; দুইজন প্রতীকী মহিলার সম্পর্কে, সখ ১২:৪।
ডাল:- (১) হিব্রæ ‘আদাসিম,’ শিমজাতীয় কৃষিজ উদ্ভিদ, বিশেষ করে কলাই বা মসুরের ডাল, যেগুলো সিরিয়াতে আদাস্না মে পরিচিত এবং সচরাচর পাওয়া যায়, আদি ২৫:৩৪; ২ শমূ ২৩:১১। লাল রঙের স্যুপ জাতীয় যে জিনিস যাকোব রান্না করেছিলেন তা ছিল মূলত ডাল, আদি ২৫:২৯-৩৪। অবশালোমের কাছ থেকে দায়ূদ পালিয়ে মহনয়িমে গেলে পর অন্যান্য খাদ্যের সঙ্গে দায়ূদ ও তাঁর সঙ্গীদের ডাল খেতে দেওয়া হয়েছিল, ২ শমূ ১৭:২৮। এটি হচ্ছে মটরশুঁটি বা শিমগোত্রীয় গাছ বিশেষ, যে গাছে সাধারণত শিমের মতই ফল ধরে থাকে। (২) হিব্রæ “নাজিদ,” অর্থাৎ “সিদ্ধ করা খাবার”। সিদ্ধ করা মুসুড়ির ডালের মত খাবার, আদি ২৫:২৯; ২ রাজা ৪:৩৮।
ডালা:- দেখুন: ঝুড়ি।
ডালিম:- হিব্র“রিম্মম”। মিশর ও প্যালেষ্টাইনের একটি সাধারণ ফল, গণনা ২০:৫; শমূ ১৩:২৩; দ্বি.বি. ৮:৮; এই ফল অত্যন্ত সুগন্ধি যুক্ত মিষ্টি ফল। যোয়েল ১:১২ পদে ঈশ্বরের বিচারে শুকিয়ে যাওয়া ডালিম গাছের উল্লেখ আছে। রাজা শলোমনের গজলে অনেকবার এই ফলের কথা উল্লেখ করা হয়েছে, শলো ৪:৩,১৩। মহাপুরোহিতের এফোদের প্রান্ত ডালিম
এবং সোনালী ঘণ্টা দিয়ে অলঙ্করণ করা ছিল, যাত্রা ২৮:৩৩,৩৪। মন্দিরের বারান্দায় স্থাপিত থাম দু’টির মাথার চারপাশে শিকলের সঙ্গে সারি বেঁধে ব্রোঞ্জের তৈরি ২০০ ডালিম ফল লাগানো ছিল, ১ রাজা ৭:২০।
ডিম:- হিব্রæ শব্দ “বিতসা,” অর্থ, “শুভ্রতা”। একটি খাবার, যা উটপাখি বা কাকাতুয়া থেকে শুরু করে যেকোন পাখি
থেকে পাওয়া যায়, দ্বি.বি. ২২:৬; ইয়োব ৩৯:১৪; যিশা ১০:১৪; ৫৯:৫। বিছা থেকে ডিম পাওয়া যায়, যা ডিমের সাদা
অংশের মত ¯^াদহীন, ইয়োব ৬:৬; লূক ১১:১২। ডিমের ক্ষেত্রে “হাল্লামুথ” শব্দের উল্লেখ আছে যার অর্থ বি¯^াদ বা ¯^াদহীন। তাই ইয়োব তাঁর বক্তব্যে ইলীফসকে বি¯^াদ অর্থাৎ মূর্খ বলেছেন।
ডুমুর:- (১) ডুমুর গাছ: লূক ১৯:৪। প্রায়ই রাস্তার ধারে ছায়া পাওয়ার জন্য ডুমুর গাছ লাগানো হত। বর্তমান ইস্রায়েল দেশের যিরীহোতে হেরোদের জল যাবার পাকা নালার মধ্যে একটি পুরানো ডুমুর গাছ খুঁজে পাওয়া গেছে। আমোস ৭:১৪। দেখুন: তুঁত। এই গাছের পাতা আখরোট গাছের পাতার মত হৃৎপিণ্ড আকৃতির, নিচের দিকে ঝুলে থাকে এবং এর সুগন্ধি আছে। ডালের প্রত্যেকটি শাখার গোড়ায় থোকায় থোকায় ফল ধরে। ভাববাদী আমোস ডুমুর গাছের দেখাশুনা করতেন; কিন্তু সেপ্টুয়াজিন্টে বলা হয়েছে তিনি একজন ডুমুর ফল সংগ্রাহক (গ্রীক “নিসন”) ছিলেন। যারা ডুমুর ফল সংগ্রহ করতো, তারা ডুমুর ফল পুষ্ট হলে তা খোঁচা দিয়ে ফুটো করতো এবং চার দিন পর তা পেকে যেত। যদি পাকা ফল কুড়ানো না হত তবে সেগুলো এক রকম ডাঁশ মাছি নষ্ট করে দিত। ডুমুর ফলগুলোতখন খাবারের অযোগ্য হয়ে যেত। ডুমুর গাছ সব সময় সবুজ থাকে এবং প্রায় সারা বছর ধরে ফল দেয়, এই জন্য এই ফলগুলো গরিবদের জন্য খুবই দামী। কাঠগুলো ফুটো-ফাটা হলেও টেকসই এবং আদ্রতায় কিম্বা গরমে তা নষ্ট হয় না। মিশরীয়দের মমি এই কাঠের বা·ে রাখা হত যা হাজার হাজার বছরেও এখন পর্যন্ত নষ্ট হয়নি। জমে যাওয়া শিশির এবং শিলা বৃষ্টিতে ডুমুর গাছ ধ্বংস হয়ে মিশরীয়দের অনেক ক্ষতি হয়, গীত ৭৮:৪৭। রাজা দায়ূদ একজন তদারককারীকে তাঁর ডুমুর গাছ দেখাশুনা করার ভার দেন, ১ বংশা ২৬:২৮; এই পদের সঙ্গে তুলনা করুন ১ রাজা ১০:২৭। (২) ডুমুর ফল: প্রথম উল্লেখ করা হয়েছে আদি ৩:৭ পদে। দ্বি.বি. ৮:৮ পদে উল্লিখিত ডুমুর ফলকে প্যালেষ্টাইন দেশের সব থেকে মূল্যবান ফসল বলা হয়েছে। এটি শান্তি ও সমৃদ্ধির প্রতীক, ১ রাজা ৪:২৫; মীখা ৪:৪; সখ ৩:১০। চিকিৎসা ক্ষেত্রে ওষুধ তৈরির জন্য ডুমুর প্রয়োজন হয়, ২ রাজা ২০:৭; অনেক ডুমুর একসাথে নিয়ে ভর্তা করে পিঠা বানানো হত, যা ছিল সু¯^াদু খাবার, ১ শমূ ৩০:১২; যির ২৪:২। আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্ট এই ডুমুর গাছকে বৈথেনিয়া দিয়ে যাবার সময় তার কাছে ফল চেয়ে না পেয়ে অভিশাপ দিয়েছিলেন, মার্ক ১১:১৩; সেই ঘটনা ও পরিস্থিতি উপস্থিত সকলকে হতবাক করেছিল, কারণ নতুন নিয়মের লেখকরা বলছেন, তখন ডুমুর ফল পাকবার সময় ছিল না। নতুন নিয়মের সময়ে ডুমুর গাছে সাধারণত আগেই ফল ধরে, কিন্তু ডুমুর গাছটিতে যেহেতু পাতা ছিল এজন্য তার ফলও থাকা উচিত ছিল Ñ নির্দিষ্ট সময়ের আগে ডুমুর গাছটি যেহেতু তার পাতা প্রকাশ করেছে সে জন্য সঙ্গে সঙ্গে তার কাজ অর্থাৎ তার ফলও প্রকাশ করা উচিত ছিল। এই ডুমুর গাছটি যেন অন্যসব গাছদের চেয়ে একটু বেশি অগ্রগামী হয়ে দম্ভের সঙ্গে বলছে ও পাতাগুলোকে প্রদর্শন করেছে এজন্য যে, প্রভু যীশু খ্রীষ্ট যেন এই রাস্তা দিয়ে যাবার সময় তার কাছে আগে আসেন ও তার ফল দিয়ে তিনি তাঁর ক্ষুধা মিটিয়ে নিতে পারেন। কিন্তু প্রভু যীশু খ্রীষ্ট তার এই চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করে যখন তার কাছে গেলেন তখন দেখলেন অন্যসব পাতাওয়ালা গাছদের মত সেও শুধু নিজেকে সাজিয়ে রেখেছে। কিন্তু এখনও ফলের সময় হয়নি বলে অন্যদের মতই এমন অজুহাত তুলে সেও ফল দিতে পারে নি। ঠিক এমনিভাবেই প্রকৃতির মত মানুষও অনেক কথা ও অনেক কিছু দিয়ে নিজেকে সাজায় ও সুন্দর করে উপস্থাপন করে, কিন্তু বাস্তব কাজের ফল নানা অজুহাত দেখিয়ে প্রকাশ করতে পারে না। প্যালেষ্টাইন দেশের ডুমুর গাছ (ফি-কাস ক্যারিকা) বছরের নির্দিষ্ট সময় অন্তর অন্তর দুই থেকে তিনবার ফল দিয়ে থাকে। (১) বিক্কুরাহ বা “প্রথমে পাকা আঙ্গুর” মিখা ৭:১; যিশা ২৮:৪; হোশেয় ৯:১০; যেটি জুনের শেষ দিকে পাকে, এবং পাকার পরপরই এগুলো মাটিতে ঝড়ে পড়তে থাকে, গণনা ৩:১২। (২) কেরামাস বা
“গ্রীষ্মের ডুমুর,” গ্রীষ্মের সময়েই ফল ধরতে শুরু করে ও আগষ্ট মাসের দিকে পাকতে শুরু করে। (৩) প্যাগ, সবুজ বা
কাঁচা ডুমুর,” শলো ২:১৩; গ্রীক শব্দ অলিন্থস, প্রকা ৬:১৩; অসময়ের ডুমুর অথবা শীতের ডুমুর, যা শরৎকালের ছায়াতে পাকে। ভ‚মধ্যসাগরীয় অঞ্চলে প্রচুর ফলন হয় ও সাধারণ লোকেরা এটি ব্যাপকভাবে খায় বলে ঐসব দেশে এটিকে বলে ‘গরিব মানুষের খাবার’। একে শান্তি ও সমৃদ্ধির প্রতীক হিসেবে ধরা হয়, ১ রাজা ৪:২৫; মীখা ৪:৪; সখ ৩:১০।
ডলোরোসার পথ:- অর্থ, গভীর মর্মবেদনার পথ। আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্ট পিলাতের বিচার স্থান থেকে কালভেরী পাহাড়ের উপরে ক্রুশারোপণের স্থান পর্যন্ত পথে ক্রুশ বহন করে নিয়ে যান, এই ঐতিহাসিক পথকেই নাম দেওয়া হয়েছে ‘ডলোরোসার পথ,’ মথি ২৭:২৬,৩১,৩৩; মার্ক ১৫:২০,২২; লূক ২২:২৫,৩৩; যোহন ১৯:১৬,১৮। ডলোরোসা একটি ল্যাটিন শব্দ।
ডোরাকাটা:- পশুর গায়ের ছোট ও বড় দাগ; ছাগলের ডোরাকাটা দাগ, আদি ৩১:১০,১২; ঘোড়ার ডোরাকাটা দাগ, সখ ৬:৩,৬।
ড্রাগন:- (১) হিব্রæ শব্দ “তান্নিম,” এর বহুবচন “তান”। একটি অজ্ঞাত প্রাণী যা মরুভ‚মি ও ধ্বংসস্থানে বাস করে, ইয়োব ৩০:২৯; গীত ৪৪:১৯; যিশা ১৩:২২; ৩৪:১৩; ৪৩:২০; যির ১০:২২; মীখা ১:৮; মালাখি ১:৩; সম্ভবত অন্যান্য
অনুবাদে ব্যবহার করা হয়েছে “শিয়াল”। (২) হিব্রæ শব্দ “তান্নিন,” সমুদ্রের মহা দানব, যির ৫১:৩৪। যিশা ৫১:৯ পদে
এটিকে বলা হয়েছে “কুমীর”। আদিপুস্তক ১:২১; (হিব্রæ বহুবচন “তান্নিনিম”) কোন কোন অনুবাদে আছে “তিমি” এবং
“সমুদ্রের দানব” ব্যবহার করা হয়েছে। যাত্রা ৭:৯ পদে “সাপ” উল্লেখ করা হয়েছে। প্রতীকী চিহ্ন হিসেবে, গীত ৭৪:১৩ ও যিহি ২৯:৩ পদে “জল-দানব” ব্যবহার করা হয়েছে। নতুন নিয়মে “এক প্রকাণ্ড লোহিতবর্ণ নাগ” শব্দটি পাওয়া যায়
শুধুমাত্র, প্রকা ১২:৩,৪,৭,৯,১৬,১৭ ইত্যাদি পদে এবং এখানে রূপক অর্থে শয়তান বা দিয়াবল বোঝানো হয়েছে।
দেখুন: তিমি।